Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের জীবনী

(জ্যেষ্ঠতানুসারে নয়, নামের অক্ষরের ক্রমানুসারে)

ডঃ আব্দুল আউয়াল

ডঃ আব্দুল আউয়াল উপাদি (উ:) ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মতলব স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য তদানিমত্মন প্রধান শিক্ষক প্রয়াত মোঃ ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী সাহেবের সাথে দেখা করেন। পাটোয়ারী সাহেব তাকে ৪/৫ টি বাক্য ইংরেজীতে বলতে বলেছিলেন তিনি সাথে সাথেই উত্তর দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি তাকে ভর্তি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ঐ বৎসর ঢাকা কলেজে আই.এস.সি ভর্তি হন। পরীক্ষার ফি সংগ্রহের জন্য তিনি মরহুম ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারীর শরণাপন্ন হন। তিনি তাঁকে নিয়ে বাজারে গিয়ে কিছু অর্থ সংগ্রহ করে দিয়ে বলেন পরীক্ষা দাও। ঠিক পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার মাত্র ১২/১৪ দিন এর মাথায় টাকা জমা দিয়ে এইচ.এস.সি দেন এবং ৯ নম্বরের জন্য ১ম বিভাগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে দ্বিতীয় বিভাগ পেয়ে পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে বি.এস.সি (সম্মান) ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে এম.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চাকুরীর জন্য পাকিসত্মান আনবিক শক্তি কমিশনে দরখাসত্ম করেন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে কলম্বো পস্নানে বৃত্তি নিয়ে শিক্ষা লাভের জন্য অষ্ট্রেলিয়ায় ক্যানবেরার দি অষ্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষা লাভ করতে যান। তিনি P.H.Dডিগ্রীর থিসিস বিশ্ববিদ্যালয় এ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান H.M Sen Gupta এর তত্ত্বাবধানে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে উক্ত থিসিস  এর P.H.D ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে হল্যান্ড, জার্মানী, ইংল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন , ইরাক, পাকিসত্মান পরিদর্শন ও সেমিনারে অংশ গ্রহণ করেন। তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন পরবর্তীতে বিজ্ঞান ও প্রযু&&ক্ত মন্ত্রণালয়ের একটি গবেষণা প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি এশিয়া প্যাসেফিক ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেন। (সূত্র- শতাব্দির শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বহি ১)

ফ্লাইট লেফ্টেনেন্ট এ,বি সিদ্দিক (অবঃ)

সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তামত্ম

·        রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে ডিসটিংশন মার্ক সহ ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনার্স । মিঃ জিন্নাহ ‘‘উর্দ্দু কেবল উর্দ্দুই পাকিসত্মানের রাষ্ট্র ভাষা হবে’’ ঘোষণা দিলে যে সব ছাত্র তার প্রতিবাদ করে তাদের অন্যতম। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানিমত্মন উপাচার্য ডঃ এম হোসেনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতিতে তদানীমত্মন পূর্ব পাকিসত্মানের প্রধান শিক্ষদের সম্মেলনে ‘‘উর্দ্দুকে রাষ্টভাষা’’ হিসাবে সিদ্ধামত্ম গ্রহণের প্রচেষ্টাকে কঠোর প্রতিবাদে রহিতকরণ। ১৯৫১ইং সালে চাঁদপুর মিলাদ-উন-নবী উপলক্ষে সম্মেলনের প্রধান অতিথি মরহুম কবি গোলাম মোসত্মফা ‘‘আরবী, উর্দ্দু, ফারসী ভাষার বহুল অমত্মর্ভুক্তি দ্বারা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ (!) করার প্রসত্মাব করলে তার জোড় প্রতিবাদে এবং তার সমর্থকদের দৈহিক আক্রমণ থেকে কোন প্রকার রক্ষা পান।’’

·        শিক্ষকতা নিয়ে কিছুদিন থাকলেও পরে ১৯৫১ সালে ক্যাডেট হিসেবে রাজকীয় পাকিসত্মান বিমান বাহিনীতে যোগদানের পর ১৯৫২ সালে কমিশন প্রাপ্ত হন। বিমান বাহিনীতে নিজ (চাঁদপুর) এলাকায় প্রায় এক হাজার যুবকের নিয়োগ দান।

·        ১৯৬৪ ইং সালে স্বেচ্ছায় বিমান বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে ঘোষিত বাঙ্গালীর স্বার্থ সম্পর্কিত সকল আন্দোলন-কর্মকান্ডে যোগদান। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বৃহত্তম মতলব শাখায় সভাপতি এবং চাঁদপুর মহকুমা (বর্তমান জেলা) আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত। ১৯৭৯ সাল পর্যমত্ম দায়িত্ব পালন। ১৯৭০ ইং সালে প্রাদেশিক পরিষদ (পরবর্তীতে গণ পরিষদ) এর সদস্য নির্বাচিত। স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরম্ন হলে চাঁদপুর মহকুমার (বর্তমানে জেলা) প্রথম ও প্রধান সংগঠক হিসাবে মুক্তিবাহিনীর দায়িত্ব গ্রহণ। ১৯৭৯ ইং সালে আওয়ামী লীগ (মিজান) হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত।

·        সংগ্রামের সময়ে পাক বাহিনী কর্তৃক ধ্বংসস্তূপে পরিণত মতলব ডিগ্রী কলেজ, মতলবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় গুলোকে পুর্নোদ্যমে কাজ করণের ব্যবস্থা গ্রহণ। এলাকায় দুইটি কলেজ, কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং অর্ধ শতাধিক প্রাইমারী বিদ্যালয় স্থাপন । ৩৫ বছর যাবৎ মতলব ডিগ্রী কলেজে গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্য। বরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। মতলবে বিশ্ববিখ্যাত ‘‘আমত্মজার্তিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র ’’ স্থাপনে এবং প্রসারণে সক্রিয় এবং অগ্রণী সহযোগিতা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মতলব থানা শাখা ও চাঁদপুর জেলার শাখার উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, মতলব দক্ষিণ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এবং কল্যাণ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা। মতলবগঞ্জ জে.বি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সমিতির উপদেষ্টা।

·         জীবন দর্শন, সৎ-সরল এবং সর্বসত্মরের জনগণের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রেখে জীবন যাবন।

·        আকাঙ্ক্ষাঃ বঙ্গবন্ধু ঘোষিত বাঙ্গালীর সার্বিক ‘‘মুক্তি অবলোকন’’। ১৯১২ সালে তিনি ঢাকা সি. এম. এইচ. এ মৃত্যুবরণ করেন।

আব্দুল মতিন পাটোয়ারী

             তাঁর বাবা ছিলেন আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিন পাটোয়ারী। অধ্যাপক হাজী এটি.এম আব্দুল মতিন ১৯২৫ সালে বর্তমান চাঁদপুর জেলার মতলব থানার আশ্বিনপুর গ্রামের এক সম্ভ্রামত্ম মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি মতলবগঞ্জ জে.বি. উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম হতে দশম শ্রেণী পর্যমত্ম ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করেন। তাঁর পিতা মরহুম আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিন পাটোয়ারী তদানিমত্মন সর্ব ভারতীয় মুসলিম লীগের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তাঁর চাচা মরহুম শাহেদ আলী  সাবেক পূর্ব পাকিসত্মান আইন পরিষদের ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। আব্দুল মতিন ১৯৪৯ সালে বিশ্বখ্যাত আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি ১৯৫২ সনে ফুল ব্রাইট বৃত্তি নিয়ে আমেরিকার নিউইয়র্ক থেকে আমত্মর্জাতিক অর্থনীতিতে এম.এস ডিগ্রী ও ১৯৫৩ সনে লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্স থেকে অর্থনীতিতে ডিপেস্নামা লাভ করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন পাকিসত্মান জাতীয় পরিষদে ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। তিনি বহু বৎসর ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশন্স এর পরিচালক ছিলেন।

 

এ. কে. এম. ফয়েজ

            এ. কে. এম ফয়েজ মতলব উপজেলার আচলছিলা গ্রামে আহম্মেদ উল্লাহ সরকারের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বহরী মাদ্রাসা থেকে বাল্যশিক্ষা নিয়ে  মেট্রিক দেন কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে। এরপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই.এ পাশ করে বি.এ ও এম.এ পাশ করেন ঢাকায়। তিনি এল.এল.বি পাশ করেছিলেন এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র ছিলেন। বিসিএস এ উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি হবিগঞ্জের এস.ডি.ও ছিলেন। পরে তৎকালীন জাতীয় পরিষদের স্পীকার মরহুম তমিজ উদ্দিন খান তাঁকে জাতীয় পরিষদের জয়েন্ট সেক্রেটারী করে নিয়ে আসেন । তমিজ উদ্দিন খান সাহেব তাঁকে খুব সেণহ করতেন। মরহুম একে. এম. ফয়েজ খুব শামত্ম ও অমায়িক লোক ছিলেন। তাঁরা চার ভাই ও এক বোন। বড় ভাই মরহুম কফিল উদ্দিন মাষ্টার। তিনি আচলছিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। (সূত্র- শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বহি ২)

 

এম এ করিম

            এম এ করিম ১৯৩৫ সালে মতলব দক্ষিণ উপজেলার কদমতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবদুর রহমান মোল্লা এবং মাতা আলহাজ্ব খোদেজা খাতুন। তিনি সখিনা উচ্চ বিদ্যালয়, নবুরকান্দি, পশ্চিম ফতেপুর, মতলব হতে ম্যাট্রিক পাস করেন। তিনি ডিপেস্নামা-ইন-ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিও অর্জন করেন।

            কর্ম জীবনে এম এ করিম ১৯৫৫ সালে ঢাকার হাতিরপুল বয়লার পাওয়ার হাউজে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকুরি শুরম্ন করেন। ১৯৫৭ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মহিমাগঞ্জ সুগার মিলে যোগ দেন। এরপর এম এ করিম ১৯৫৯ সালে ব্যবসা শুরম্ন করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স  লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানটি মূলত লিবিয়ার সাথে কাজ করত। প্রতিষ্ঠানটি ইলেকট্রিক্যাল ওভার হেড ট্রান্সমিশন লাইন, সাবস্টেশন, পাওয়ার স্টেশন Installation and commissioningকাজ করে।

            এম এ করিম সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। ১৯৬৭ সালে নিজ খরচে চাঁদপুর থেকে মতলবে বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন স্থাপন করেন। তিনি মতলব ডিগ্রি কলেজ এবং মতলবগঞ্জ জে.বি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ছিলেন। তিনি জনকল্যাণার্থে ও দূর-দূরামত্ম থেকে আসা লোকজনের জন্য মতলব কল্যাণ পরিষদ (১৯৭০) স্থাপন করেন। তিনি মতলব বাজার ইজারা নিয়ে সকল খাজনা মওকুফ করে দেন। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মধ্যে লঞ্চ যোগে অবিভক্ত মতলব উপজেলার ২২ টি ইউনিয়নে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে  অসহায় মানুষের  মাঝে নগদ অর্থ, চাল-ডাল সহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানা, কবরস্থান নির্মাণ করেন। এর মধ্যে ফরাজীকান্দি এতিমখানা উল্লেখযোগ্য। (সূত্র: ‘মেঘনার পাড়’; চাঁদপুর জার্নালিস্ট ফোরামের প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী-২০০৬ এ গুণীজন সম্মাননা  উপলক্ষ্যে প্রকাশিত; প্রকাশকাল ৩১ জুলাই ২০০৬ এবং লেখাটি সংকলিত)

 

প্রফেসর এম.এ হালিম সরকার

            জন্ম ৩১শে ডিসেম্বর, ১৯৪০ চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার দীঘলদী গ্রামে। বর্তমানে প্রিন্সিপাল, কদমরসুল কলেজ, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ। বাবা ৯নং মতলব ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৫৫ সনে মতলব স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫৭ সালে চাঁদপুর কলেজ হতে আই.এ এবং সলিমউল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামের ইতিহাসে বি.এ (অনার্স) ১৯৬০ সনে এবং ১৯৬১ সনে এম.এ পাশ করেন।

          অনার্স এবং এম.এ পরীক্ষার ফল প্রকাশের পূর্ব পর্যমত্ম- কিছুকাল মুন্সীরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতির অনুরোধে সেই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। এম.এ পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর মির্জাপুর হাইস্কুল, হাটহাজারী, চট্টগ্রামে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করেন (১৯৬২ সনে)। তিনি বি.সি.এস (শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৬৩-১৯৮৩ সন পর্যমত্ম বরিশাল জেলার ‘ভোলা কলেজে’ অধ্যাপক হিসাবে; ১৯৮৪-১৯৮৯ সন পর্যমত্ম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে ‘শিক্ষা পরিদর্শক’ হিসাবে; ১৯৮৯-১৯৯১ পর্যমত্ম বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে  প্রেষণে) উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) হিসাবে, ১৯৯১-১৯৯২ পর্যমত্ম নবীনগর সরকারি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে, ১৯৯২-১৯৯৪ পর্যমত্ম বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে (প্রেষণে) রেজিষ্ট্রার হিসেবে কাজ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে, মে ‘৯৪ থেকে জুলাই‘৯৪ সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রামে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ১৯৯৪-১৯৯৭ এপ্রিল পর্যমত্ম, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুসত্মক বোর্ডে ‘সম্পাদক’ হিসাবে, ও সরকারি বি.এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বিভাগীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৯৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকারি চাকুরী হইতে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে  (প্রেষণে) ডেপুটি রেজিষ্ট্রার এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন কালে দেশের সর্বত্র বিশেষ করে মতলব উপজেলার বহু দাখিল মাদ্রাসাকে আলিম এবং আলিম মাদ্রাসাকে ফাজিল পর্যমত্ম উন্নীত করেন। তিনি মতলব উপজেলা সদর মাদ্রাসাটি আলিম থেকে ফাজিল পর্যমত্ম উন্নীত করে সেখানে পরীক্ষা কেন্দ্র প্রদান করেন। তাঁরই প্রচেষ্টায় হাজীগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসাটি কামিল পর্যমত্ম উন্নীত হয়। তিনি নিজ বাড়ি সংলগ্ন প্রতিষ্ঠিত খোরশেদ আরা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি (সরকারি অনুদান প্রাপ্ত) এবং নিজ এলাকার মুন্সীহাট কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী। বর্তমানে তিনি ওই কলেজের পরিচালনা পরিষদের সদস্য।

 

এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) এম রফিকুল ইসলাম এন ডি ইউ পি এস সি

·        এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) এম রফিকুল ইসলাম ১৯৫২ সালে মতলব উপজেলার বাইশপুর গ্রামে দেওয়ান বাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবার চাকুরিস্থল পাকিস্তানেই তার পড়াশুনা শুরু হয়। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯৬৩ সালে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাবলিক স্কুল,সারগোদায় পড়াশুনা করেন এবং ৬৭ সালে প্রথম বিভাগে সিনিয়র কেম্ব্রিজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরের বছর তিনি বিমান বাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৩ই মার্চ ১৯৭১ সালে পাইলট অফিসার হিসাবে কমিশন প্রাপ্ত হন। একই বছর তিনি পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (এইআরও) পরীক্ষায় প্রথম হন এবং ২০০৫ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। করাচিতে ট্রেনিং অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং স্বাধীনতার পর ওয়ার্কস ক্যাম্প এ আটক রাখা হয়। ৭২ সনে পালিয়ে বাংলাদেশে বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। একই বছর  তিনি রাশিয়ায়  উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি পরিবহন বিমানের ক্যাপ্টেন ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার স্কোয়াড্রন ও উইং অধিনায়ক, পরিচালক, ঘাঁটি অধিনায়ক ও একাডেমীর  কর্মকান্ডের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ সালে ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্সে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং চীন থেকে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সে কৃতিত্বের সহিত সম্পন্ন করেন। পাকিস্তান, আমেরিকা ও তুরস্ক থেকেও পেশাগত  কোর্স সম্পন্ন করেন এবং দুই বছর স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষক ছিলেন।

·        ১৯৮৯ সালে প্রথম ঘাঁটি অধিনায়কের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং বিভিন্ন গুরুত্ব পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৯৪-৯৭ পর্যন্ত বাংলাদেশে দূতাবাস, মালয়েশিয়ার সামরিক উপদেষ্টা এবং ১৯৯৭-২০০০ পর্যন্ত  বাংলাদেশে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি কয়েক ধরনের বিমান পরিচালনায় পারদর্শী এবং পাঁচ হাজারেরও বেশী ঘন্টা উড্ডয়ণ করেছেন। তিনি বিভিন্ন দূর্যোগের সময় ত্রাণকার্য পরিচালনা করেন।     ২০০৮ সালে  তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী  হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

·        তিনি এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং বাংলাদেশ  বিমান ও বিমান বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করেন। তার স্ত্রী বেগম শাহিনা রফিক একজন শিল্পী ও সমাজ সেবিকা এবং বিভিন্ন সমাজ সেবা কার্যক্রমের সাথে জড়িত। জনাব রফিক দুই সন্তানের জনক। ছেলে শোয়েব বিন রফিক অষ্ট্রেলিয়ায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেয়ে রুহিনা বিনতে রফিক স্কলাস্টিকায় অধ্যয়নরত আছেন। তিনি ডিফেন্স কলেজে দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা করছেন। তাছাড়া এমআইএসটির গভর্ণিং বডির অন্যতম পরিচালক।

·        সূত্র : রত্নগর্ভা চাঁদপুর, সম্পাদনায় : মোহাম্মদ সফিউল আলম (টিটো) প্রকাশকাল ১লা অক্টোবর, ২০০৭।

 

এম,এ বারী

১৯৪৮ সনের ২৪ জানুয়ারী নিজ গ্রাম নিলক্ষীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সনে মতলবগঞ্জ জে,বি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি ও ১৯৬৮ সনে মতলব ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচ,এস,সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭০ সনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ডিগ্রি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এম,এ (প্রিলিমিনারী) তে উত্তীর্ণ হয়ে এম,এ (ফাইনাল) পরীক্ষায় ভর্তি হন। কিন্তু ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি বড় ভাই শিল্পপতি ও সমাজদরদী এম,এ করিম আততায়ীর হাতে মৃত্যুবরণ করলে এম,এ করিমের শিল্প ও ব্যবসা, প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব তাঁর উপর অর্পণ হওয়ায় লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। অদ্যাবধি তিনি শিল্প স্থাপন, আমদানী-রপ্তানী ব্যবসা, গার্মেন্টস ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তিনি আর, কে, জনকল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা এবং এই ট্রাস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কাজ করছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন স্থানে মসজিদ, মাদ্রাসা ও স্কুল নির্মাণে আর্থিক সাহায্য সহ দুঃস্থ ও অসহায়দের মেয়ের বিয়ে, কঠিন রোগের চিকিৎসা ইত্যাদি সেবামূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তিনি মতলব জামে মসজিদ, মাদ্রাসা, হেফজখানা ও কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি। মতলবঞ্জ জে,  বি, উচ্চ বিদ্যালয়, ছাত্র সমিতি এবং স্কুল ট্রাস্ট ফান্ডের উপদেষ্টা, মতলব ডিগ্রি কলেজের দাতা সদস্য, মতলবগঞ্জ গার্লস স্কুল পরিচালনা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। জনকল্যাণ ও সামাজিক সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি অনেক সম্মাননা পদক পেয়েছেন। এর মধ্যে মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশনের ‘গান্ধিজী পিস এওয়ার্ড ২০০৮’, শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হক পরিষদের ‘শেরে বাংলা ২০০৮ পদক’, তারম্নণ্য মাদক বিরোধী যুব কল্যাণ সংগঠনের ‘ভাসানী স্মৃতি পুরস্কার’ অন্যতম। তিনি ব্যবসা বাণিজ্য উপলক্ষে বহু দেশ ভ্রমন করেছেন।

 

এয়ার কমডোর (অবঃ)এ কে এম হারুন চৌধুরী

এয়ার কমডোর এ কে এম হারম্নন চৌধুরী, এন ডি সি, পি এস সি (অবঃ) ১৯৫৩ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর মতলব উপজেলার এক সম্ভ্রামত্ম মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম ডাঃ আব্দুল আজিজ একজন প্রথিতযশা চিকিৎসক ছিলেন। তিনি মতলব ডিগ্রি কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জি ডি (পাইলট) শাখায় যোগদান করেন এবং ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বর মাসে কমিশন লাভ করেন।

কর্মজীবনে একজন দক্ষ বৈমানিক হিসেবে বিভিন্ন গুরম্নত্বপূর্ণ পদে অত্যমত্ম সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিমান পরিচালনা, সরকারী দায়িত্ব পালন, প্রশিক্ষণ ও জাতিসংঘ শামিত্মরক্ষা বাহিনীতে  কর্তব্য পালনের জন্য তিনি ৪৪টি দেশে ভ্রমণ করেছেন। বিমান বাহিনী একাডেমির কমান্ডেন্ট, ঘাঁটি অধিনায়ক, বিমান সদর দপ্তরের পরিচালক সহ বিভিন্ন দায়িত্ব তিনি অত্যমত্ম সুচারম্নভাবে সম্পন্ন করেছেন। অধিকন্তু বেসামরিক বিমান  চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে জাতীয় বিমান  চলাচল নীতিমালা প্রণয়নে তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বস্নিয়াতে  জাতিসংঘ শামিত্মরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় অসামান্য অবদানের জন্য ‘জাতিসংঘ শামিত্ম মেডেল’ লাভ করেন। এয়ার কমডোর হারম্নন সুদীর্ঘ ৩২ বছরের বর্ণাঢ্য ও সফল কর্মজীবন শেষে ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে  চাকরি হতে অবসর গ্রহণ করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিন পুত্র সমত্মানের জনক। একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ যিনি রীতিমত গলফ্ খেলেন, গান চর্চা করেন এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।

 

 

ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী

দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলোকিত মানুষ প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, চাঁদপুর জেলা তথা সারাদেশে শিক্ষার আলোকবর্তিকা প্রজ্জ্বলনকারী উজ্জ্বল নক্ষত্র ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম জয়শ্রী গ্রামে সভ্রামত্ম পাটোয়ারী পরিবারে ১৫ মার্চ ১৯০৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রামে প্রাথমিক পাশ করে ১৯১৯ সালে বাবুরহাট হাই স্কুলে ভর্তি হন। ১৯২৪ সালে বাংলা সহ পাঁচটি বিষয়ে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯২৬ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ বিজ্ঞান শাখা থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাশ করেন। ১৯২৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় থেকে কৃতিত্বের সাথে বিএসসি পাশ করেন। অত্যমত্ম মেধার অধিকারী এই কৃতিমান ব্যক্তিত্ব ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী ১৯৩০ সালের মে মাসে মতলবগঞ্জ জেবিএইচই স্কুলে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। মাত্র ২৪ দিন শিক্ষকতার পর নাটকীয়ভাবে বিভাগীয় ইন্সপেক্টর শামসুল ওলামা কামাল উদ্দিন আহমদ কর্তৃক প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োজিত হন। এ স্কুলে তাঁর উপস্থিতি ঝড়-ঝঞ্ঝার সৃষ্টি করলেও স্বীয় ব্যক্তিত্ব ও কর্মকুশলতার প্রভাবে সব কাটিয়ে উঠে একাধিক্রমে ৪১ বছর (১৯৩১-১৯৭১) কৃতিত্বের সাথে কাজ করে খ্যাতিমান এই শিক্ষাবিদ সফল প্রধান শিক্ষক হিসেবে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে স্কুলটিকে দেশের অদ্বিতীয় স্কুলে পরিণত করেন। পরে আরো কয়েক বছর ঐ স্কুলের রেক্টর ছিলেন।

            একবার স্বার্থান্বেষীদের স্ত্তপীকৃত অভিযোগের তদমত্ম শেষে বিভাগীয় ইন্সপেক্টর জ্যোতির্ময় লাহিড়ী মমত্মব্য করেন, ‘যেমন স্কুলের লেখাপড়া ভাল, তেমনি মৎস্য চাষ, শাক-সব্জী উৎপাদন এবং অন্যান্য কো-কারিকুলার তৎপরতা। স্কুলে চমৎকার সুন্দর শৃঙ্খলা বিরাজমান। আমি ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারীর মত প্রতিভাবান সক্রিয় শিক্ষক খুব কমই দেখেছি। তিনি স্কুলের প্রাণ।’ ডি.পি.আই. খান বাহাদুর আবদুল হাকিম স্কুল পরিদর্শন শেষে বলেছেন, ‘পাটোয়ারী শিক্ষক রাজপুত্র। তাঁর জীবন ইতিহাস লিখে রাখার মত।’

            ১৯৬২ সালে তৎকালীন পাকিসত্মান সরকার রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘‘তঘমা-ই-খেদমত’’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিসত্মানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসাবে ‘‘বেস্ট টিচার এওয়ার্ড’’ পান। ১৯৬৭ সালে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসাবে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন এবং জেলার কৃতি প্রধান শিক্ষক হিসাবে পুনঃ পুনঃ স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হন। ১৯৮১ সালে কুমিল্লা ফাউন্ডেশন থেকে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৮১ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। তাঁর শিক্ষানুরাগীতার আরো প্রমান, মতলবে উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা।

            অনাড়ম্বর, সাদা সিধে পায়জামা-পাঞ্জাবী পরিহিত আবক্ষ শ্মশ্রম্নমন্ডিত পাটোয়ারীর সাধনাপ্রসূত কয়েকটি কথা : (১) ‘ছাত্র বড় না হলে স্কুল বড় হয় না, স্কুল বড় না হলে হেড মাস্টার বড় হয় না।’ (২) ছাত্ররা স্কুলের মণি মানিক। স্কুল বাগানের চারা গাছ। যত্ন করলে সুন্দর ফুল ফোঁটে।’ তাঁর রচিত বই ‘উপদেশ কণিকা’ জীবন অভিজ্ঞতার শিক্ষামূলক মূল্যবান  গ্রন্থ। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী দেশ জাতির জন্য ১৫ টি মূল্যবান ও উপদেশমূলক  গ্রন্থ  রচনা করেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বব্যাপী মরহুম ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারীর অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী স্ব স্ব ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। জীবনে তারা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মরহুম ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী বাংলাদেশের ইতিহাসে তথা আগামী প্রজন্মের কাছে আলোকবর্তিকা হিসেবে নক্ষত্র হয়ে থাকবে। ১৯৯৯ সালে ২৫ আগষ্ট এ খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র : ১। সুবর্ণ জয়মিত্ম-২০০৫, চাঁদপুর জেলা সমিতি ঢাকা কর্তৃক ১০ই জুন প্রকাশিত স্মরণিকা।

২। কুমিল্লা জেলার ইতিহাস, কুমিল্লা জেলা পরিষদ কর্তৃক ৭ই জুন ১৯৮৪ কর্তৃক সালে প্রকাশিত, পৃষ্ঠা-৪২১-৪২২।

 

জনাব কলিমউদ্দিন আহম্মদঃ

          জনাব কলিমউদ্দিন আহম্মদ (এম.এস.সি) ১৯ নং নারায়ণপুর ইউনিয়নের সারপাড় গ্রামের এক বিশিষ্ট সম্ভ্রামত্ম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা মরহুম ফরিজউদ্দিন আহম্মদ তৎকালীন বৃটিশ ভারত বর্ষে ২৬ বৎসর যাবৎ নারায়ণপুর ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পিতা জীবিত অবস্থায় বিভিন্ন সমাজ সেবামুলক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। নারায়ণপুরের প্রাক্তন এম.ই স্কুল তাঁরই প্রতিষ্ঠিত।

            শিক্ষাজীবনে জনাব কলিমউদ্দিন আহম্মদ অত্যমত্ম মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ৪ টি বিষয়ে লেটারসহ তিনি নারায়ণপুর হাই স্কুল হতে মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন হন। পরবর্তীতে তিনি এম.এ.জি পরীক্ষায় ১ম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এম.এ.জি পাশ করেন। পাকিসত্মান সরকার কৃষির উপর উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য তাকে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মান ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষির ওপর গবেষনার জন্য পাঠিয়েছিলেন। জনাব কলিমউদ্দিন আহম্মদ সাহেব কিছুদিনের জন্য পূর্ব পাকিসত্মান কৃষি তথ্য বিভাগে ডিপুটি চিপ ইনফরমেশন অফিসার হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ তামাক উন্নয় বোর্ডে ডেপুটি ইকোনমিষ্ট হিসেবে কাজ করছেন।

            তিনি অত্যমত্ম মেধাবী, সদালাপী ও একজন লেখক হিসেব অত্র থানায় সু-পরিচিত। তিনি কৃষির ওপর The Agriculture in East Pakistanযে বই খানা লিখেছেন, তা বর্তমানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য পুসত্মক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি শত শত শিক্ষিত লোকের চাকুরীর সংস্থান করেছেন। নারায়ণপুর বিত্রডিসি অফিস খানা তারই প্রতিষ্ঠিত। 

আলহাজ্ব কাজী সুলতান আহমাদ

            বরদিয়ার আলহাজ্ব কাজী সুলতান আহমাদ জম্ম ১৯৪৩ সালে, পিতা-মরহুম কাজী আব্দুর রহমান, মাতা-মরহুমা মহরজান বিবি, চার ভাই এক বোনের মধ্যে আলহাজ্ব কাজী সুলতান সবার ছোট। বরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা শুরু করে চাঁদপুর সরকারি হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বি,এ পাশ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করেই বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান শাখায় হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ ১২ বছর চাকুরি করে স্বেচ্ছায় চাকুরি থেকে অবসর নেন তিনি। মায়ের অনুপ্রেরণা ও ভাইদের সাহায্য সহযোগিতায় ব্যবসা বাণিজ্যে নিয়োজিত করেন নিজেকে।

            সমাজসেবা ও রাজনীতির পাশাপাশি আলহাজ্ব কাজী সুলতান আহমাদ ছিলেন একজন দানশীল ব্যক্তিত্ব। তিনি তার নিজের খরিদকৃত সম্পত্তি থেকে ৪ একর ৫৩ শতাংশ দান করেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হাসপাতাল, স্কুল, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের জন্য। তিনি বরদিয়া  জুনিয়র উচ্চবিদ্যালয়কে বরদিয়া কাজী সুলতান আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত করতে ভূমিকা রাখেন। তিনি মতলব উত্তর উপজেলা দক্ষিণ এখলাসপুর কাজী সুলতান আহমাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহরজান নুরানী তালিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা  প্রতিষ্ঠা করেন। মোবারকদি কাজী বাড়ী বায়তুল আমান জামে মসজিদ আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন। কাজী সুলতান আহম্মদ ওয়াকফ স্টেট, কাজী সুলতান আহমেদ ট্রাস্ট, আল সুলতান ফিলিং স্টেশন লিঃ, কাজী মেটাল প্রডাক্টস লিঃ, কেএসএ সিএনজি সার্ভিস লিঃ, স্টার ট্রেডিং কর্পোরেশন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ও মালিক তিনি। এ সমসত্ম প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ২ শত শ্রমিক কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। আলহাজ্ব কাজী সুলতান আহমাদ ১৯৬৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত হন। বর্তমানে কার্যকরী কমিটির সম্মানিত সদস্য। মুন্সিরহাট কলেজের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন দাতা সদস্য তিনি। আগামীতে তিনি মোবারকদি গ্রামে কাজী আব্দুর রহমান হাসপাতাল নামে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল স্থাপন এবং কাজী আব্দুর রহমান মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার চিমত্মাভাবনা করেছেন ।

গোলাম রহমান খান

            গোলাম রহমান খান লুধুয়া নিবাসী হলেও মতলবের উন্নয়নে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। সম্ভবত তিনি ১৯৮৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। এন্ট্রান্স পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেননি। কিন্তু তিনি ছিলেন প্রখ্যাত স্বদেশ আন্দোলনকারী। তিনি জীবনভর গরীবের জন্য কাজ করেছেন। তাঁরই অক্লামত্ম চেষ্টায় চাঁদপুরের SDOআজিজ আহমেদের মতামতের মাধ্যমে Chief Minister  শেরে-বাংলা এ,কে ফজলুল হক P.S Board আইন পাশ করেন। তখন মতলব বাজারের অবস্থা এত শোচনীয় ছিল যে, বর্ষাকালে হাঁটুর উপরে কাপড় উঠানো ছাড়া কেউ বাজারে ঢুকতে পারেনি। অনেক গরীবের সওদা সেই কাঁদা মাটিতে পড়ে যাওয়াতে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হতো । তিনি তদানিমত্মন চাঁদপুরের SDOআয়েংগার ICS  কে দিয়ে Improvement Committeeগঠন করেন। বোয়ালিয়ার হিন্দু জমিদারকে Secretaryকরে নিজে Assistant Secretaryহন। বাজারের রাসত্মাঘাট পাকা করেন। তাঁরই প্রচেষ্টায় মতলব সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় (১৯২৩ সাল)। প্রথমে Honouraryও পরে Secretaryহিসেবে ১৯৩৫ সাল পর্যমত্ম দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মতলবগঞ্জ জে,বি, উচ্চ বিদ্যালয়ের সেক্রেটারী নিযুক্ত হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করেন। জ্ঞানতাপস, শিক্ষাবিদ ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী তাঁর সেক্রেটারীর দায়িত্ব গ্রহণের কয়েকমাস পূর্বে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন (জুন,১৯৩০)। তিনি তাঁকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেন। তিনি মতলব বাজার জামে মসজিদের সেক্রেটারী ছিলেন। তাঁর সময় মসজিদ কাঁচা ঘর থেকে দোতালা দালান হয়। তিনি আঞ্জুমানে ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি একদল সাহসী যুবকদের নিয়ে ‘ভন্ড দমন সমিতি’ গঠন করেন। তারই উদ্যোগে মতলব হাইস্কুলের দক্ষিণাংশে (পুকুর সংলগ্ন) Golam Rahman Instituteও Free Reading roomপ্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ১৯৪৩ সালে মাত্র ৫৪ বছর বয়সে ইহলীলা ত্যাগ করেন।

তথ্য সূত্র : মরহুম আলী আকবর খান, লুধুয়া, প্রধান শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত)।

 

ফজলুল হক

জন্ম- বাংলা ১৩৪২ সালে ১০ ই ভাদ্র। নিজ গ্রাম ঘোড়াধারী, পো: মাষ্টার বাজার, উপজেলা- মতলব, জেলা- চাঁদপুর। মতলব স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ১৯৫৪ ইং সালে প্রথম বিভাগে তৎকালীন ২য় গ্রেডে বৃত্তিসহ মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৬ সালে চাঁদপুর কলেজ হতে আই.এ এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে বি.এ. (অনার্স), ১৯৫৯ সনে এবং ১৯৬০ সনে এম.এ পাশ করেন। সেই বৎসরই তৎকালীন কেন্দ্রীয় সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৬১ সনে তৎকালীন পাকিসত্মান অডিট এন্ড একাউন্ট সার্ভিসে যোগদান করেন। চাকরি থাকা অবস্থায় মার্কিন সরকারের বৃত্তি নিয়ে ইউটা টেস্ট ইউনিভার্সিটি ইউটা, ইউ, এস, এ হতে একাউন্টিং এ এম.এস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৯ সালে বাংলাদেশে মহা হিসাব রক্ষক, কন্ট্রোলার জেনারেল অব একাউন্টস, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে ৩০শে ডিসেম্বর সরকারি চাকুরি হইতে অবসর গ্রহণ করেন।

ব্রিগে : জে: ফারুক আহমেদ চৌধুরী, পি,এস,সি

            ১৯৬০ সালের ১৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন। মতলব হাইস্কুল থেকে ১৯৭৬ইং সনে এস,এস,সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে মতলব ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচ,এস,সি তে উত্তীর্ণ হন। ১৯৮১ সালে সেনাবাহিনীতে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮৭ইং সনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি,এস,সি (ইঞ্জিনিয়ারিং) ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৯৭ইং সালে এঙ্গোলা, ২০০৩ সালে U.N. Peace Keeping Operationএ অংশগ্রহণ করেন। ২০০৮ সনে আইউবি থেকে এমবিএ সমাপ্ত করেন, ২০১২ সালে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং MIST এর গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ছিলেন। ৩১ বছরের চাকুরী শেষে ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই সেনাবাহিনী থেকে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি সেনাবাহিনীতে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, জার্মানি, রাশিয়া, তুরস্ক, বোয়ালিয়া,  চীন ও অষ্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, ইরান, সুইজার ল্যান্ড প্রভৃতি দেশে গমন করেন।

 

মনির উদ্দিন আহম্মদ

            জনাব মনির উদ্দিন আহম্মদ (বি.এ) ১৯ নং নারায়নপুর ইউনিয়নের সারপাড় গ্রামে এক বিশিষ্ট পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  পিতা মরহুম ফরিজ উদ্দিন আহম্মদ একজন সমাজ কর্মী হিসেবে বহুদিন কাজ করে গেছেন। ছাত্র জীবনে তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সমবায় বিভাগের জয়েন্ট Register/যুগ্ম নিবন্ধক পদে ৯ বছর কাজ করে অবসর নিয়েছেন। তিনি অত্যমত্ম সদালাপী ও একজন সু-সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত।

            চাকুরী জীবনে তিনি অত্র এলাকার বহু শিক্ষিত যুবকের চাকুরীর সংস্থান করেছেন। তাঁর কর্মদক্ষতার জন্য সরকার বিভিন্ন সময় তাঁকে আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন সমবায় Instituteএ উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি বর্তমানে কোর্ট বাড়ী সমবায় মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করছেন। তিনি অনেক বই রচনা করেছেন। এর মধ্যে পাড়াগাঁয়ের আসর, রচডেলের ইতিকথা, সমবায় কর্মীর শিক্ষা-সাথী, সমবায়ের সহজ পাঠ, পূর্ব পাকিসত্মানে সমবায়ের আজাদী-উত্তর বিশ বছর, আখচাষী চিনিকল সমবায়, সমবায় গ্রাম বাংলা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

            তিনি ভারত, শ্রীলংকা, কানাডা, ইংল্যান্ড, জার্মানি, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, ও জাপানে ভ্রমণ করেছেন। তাঁর পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়ে মেহের নিগার বুলবুল বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুগ্মসচিব (বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার)। তিনি এলাকার অনেক মানুষকে চাকুরী দিয়ে সহায়তা করেছেন।

ডঃ  মহীউদ্দীন খান আলমগীর

ডঃ মহীউদ্দীন খান আলমগীরের জন্ম চাঁদপুর জেলার, কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খান বাড়িতে। জনাব খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে অর্থনীতিতে অনার্স, ১৯৬২ সালে অর্থনীতিতে মাস্টার্স, ১৯৭৬ সালে বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে পলিটিক্যাল ইকোনোমিতে মাস্টার্স এবং ১৯৭৬ সালে বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৮০ সালে যুক্তরাস্ট্রের বোস্টন থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন।

তিনি চাঁদপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় সংসদের পাবলিক একাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৭-২০০১ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান  ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ বিমান, বিআইডিসি, ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও এনএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সচিব ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। ইআরডির অতিরিক্ত সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। বিপিএটিসির এমডিএস, বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের এমডি, আইসিবির পরিচালক, বাংলাদেশ জার্ণাল অব পলিটিকাল ইকোনোমির নির্বাহী সম্পাদক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, আইডিবির নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ শিল্পঋণ সংস্থার পরিচালক, ভূমি সংস্কার কমিশনের সদস্য সচিব, আইএফআইসির পরিচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পাকিসত্মান সিভিল সার্ভিসে যোগদানের পর সরকারের অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি যশোরের জেলা প্রশাসক হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি দেশে বিদেশে অনেক সম্মাননা পেয়েছেন। তিনিChairman, Institute of Integrated Rural Development (IIRD)- NGO working on poverty alleviation, Founding Member of Bangladesh Association for Community Education (BACE)- a NGO working in the field of mass education, President of Bangladesh Economic Association (1987), Life Member of Bangladesh Economic Association, Life member of Bangla Academy ।

তাঁর বেশ কিছু পাবলিকেশন রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-

-Local Government System of Bangladesh: Recent Trends. Muhiuddin Khan Alamgir, 1990, Chr.Michelsen Institute, Bergen, Norway

-Recent Trends in Bangladesh Economy (Bengali). Muhiuddin Khan Alamgir, Bangladesh Journal of Political Economy Vol. 9, No. 3, Dec 1989, Bangladesh Economic Association, Dhaka

-Public Enterprises and the Financial System in Bangladesh. Muhiuddin Khan Alamgir, Bangladesh Journal of Political Economy Vol. 8, No. 1, June, 1988, Bangladesh Economic Association, Dhaka

-Industrial Evalution and Performance: South Asia and Bangladesh. Muhiuddin Khan Alamgir Faizur Razzaque, Published in Strategies for Industrial Development: Concept and Policy Issues Suh Jang-Won (ed), Asian and Pacific Development Centre, Kualalampur, 1989

-Development Banks in Bangladesh: Problems and Policies for the Third Five Year Plan. Muhiuddin Khan Alamgir, Bangladesh Journal of Political Economy Vol. 7, No. 1a, 1985, Bangladesh Economic Association, Dhaka

-Land Reform in Bangladesh. Muhiuddin Khan Alamgir, Centre for Social Studies, Dhaka University, 1981

-Towards Land Reform in Bangladesh. Muhiuddin Khan Alamgir, Journal of Social Studies, Dhaka, January 1981

-Development Strategy for Bangladesh. Muhiuddin Khan Alamgir, Centre for Social Studies, Dhaka University, 1980

 

ডঃ মাহফুজুল হক

            নিজ গ্রামের শ্রীবর্দি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৪৩ সালে মতলবগঞ্জ জে.বি হাই স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আই.এ অর্থনীতিতে বি.এ অনার্স ও এম.এ পাশ করে ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৯ সালে ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ১৯৬৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। মতলব স্কুলের ছাত্রদের মাঝে ডঃ হকই প্রথম পি.এইচ.ডি লাভ করেন। ডিগ্রী লাভের পর তিনি প্রায় এক যুগ সুদানের খার্তুম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। দেশ স্বাধীনের পর প্রায় অর্ধযুগ পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮১ সাল থেকে শ্রীলংকায় দু’বছর কলম্বো পস্ন্যান ব্যুরোর প্রধান অর্থনীতিবিদ ছিলেন। এরপর পাঁচ বছর বিশ্বব্যাংকের অনুকূলে সোমালিয়ায় উর্ধ্বতন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৮ সালে দেশে ফিরে তিনি বিভিন্ন সংস্থা/ প্রকল্পে বিভিন্ন সময়ে পরামর্শক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। (সূত্র- শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বহি ০২)

 


মেজর জেনারেল মোখলেছুর রহমান পিএসসি (অবঃ)

মতলব থানার অমত্মর্গত খাঁদেরগাঁও গ্রামে এক সম্ভ্রামত্ম মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মেজর জেনারেল মোখলেছুর রহমান। তাঁর পিতা ছিলেন ফাজিল উদ্দিন আহমেদ মাষ্টার। খাঁদেরগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে নিম্ন  প্রাইমারী বৃত্তি সহ পাশ করার পর মতলব স্কুলে প্রাইমারী সেকশনে ৩য় শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৫১ ইং সনে মতলব জে.বি. উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি কৃতিত্বের সাথে ইতিহাস সহ তিন বিষয়ে লেটার ও ষ্টার মার্ক পেয়ে প্রথম বিভাগে পাশ করেন ও প্রথম গ্রেডে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৫৩ সালে বরিশাল বি.এম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট (আই.এস.সিতে) সাইন্স পরীক্ষায় পদার্থ বিজ্ঞানে লেটারসহ প্রথম বিভাগে পাশ করেন ও প্রথম গ্রেডে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৫৩ সনে আই.এস.সি পাশ করার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। উক্ত কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস  ডিগ্রি লাভ করেন। এম.বি.বি.এস পাশ করার পর একই কলেজে হাসপাতালের অনারারী জুনিয়র হাউজ সার্জন এবং পরে সিনিয়র হাউজ সার্জনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৮ মার্চ ১৯৬০ সনে সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে যোগদান করেন এবং বেশিরভাগ সয়ম তৎকালীন পশ্চিম পাকিসত্মানে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্টাফ কলেজ কোয়েটা, পাকিসত্মান থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী পি.এস.সি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে অক্টোবর মাসে পাকিসত্মানে সামরিক বন্দি ক্যাম্প থেকে সপরিবারে স্ব-দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। মেজর পদে সেনাবাহিনিতে যোগদান করেন। ১৯৯২ সাল পর্যমত্ম আর্মস ফোর্সে মেডিক্যাল সার্ভিসে বিভিন্ন শাখায় গুরম্নত্বপূর্ণ উচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯২ সালে তিনি মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করে আর্মস মেডিক্যাল সার্ভিসের মহাপরিচালক পদটি অলঙ্কৃত করেন এবং উক্ত পদ থেকে তিনি ১৯৯৬ সালে অবসর গ্রাহণ করেন।

            তাছাড়া পেশাগত অন্যান্য কাজে তিনি আমেরিকা, মেক্সিকো, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, সৌদি আরব, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং পাকিসত্মানসহ আরো অনেক দেশ সফর করেন। তিনি ইতিহাস  পড়ে এবং দেশ ভ্রমন করে অবসর সময় কাটাতে পছন্দ করেন।

            বর্তমানে তিনি সমাজ সেবা কাজ নিয়ে সর্বক্ষণ ব্যসত্মতার মধ্যে সময় কাটান। তিনি দেশের সর্ব বৃহত্তম ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে অনারারী এডভাইজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি মতলব উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি। মতলবগঞ্জ জে.বি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সমিতি ঢাকা এর উপদেষ্টা এবং মতলব দিশারী সমিতির প্রাক্তন সভাপতি এবং বর্তমানে সদস্য। তাছাড়া তিনি তাঁর পিতার স্মরণে একটি ওয়েল ফেয়ার সমিতি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

 

মেজবাহউদ্দিন আহম্মেদ

            ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রম্নয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা প্রয়াত আবুল হোসেন মিয়া এবং মাতা প্রয়াত মরিয়ম বেগম। তিনি মতলবগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইংরেজীতে সণাতক (সম্মান) এবং এম.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ১৯৫৭ এবং ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে। মিঃ আহম্মেদ এক বৎসর আইন বিষয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি ইংরেজীতে ১ম এবং বাংলায় দ্বিতীয় স্থান অর্জণ করেন ১৯৫৭-১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে। তিনি জুন ১৯৫৯ থেকে এপ্রিল ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ পর্যমত্ম পূর্ব পাকিসত্মান বর্তমানে  ফৌজদার হাট ক্যাডেট কলেজে ইংরেজী বিষয়ে প্রথম বাঙালী হিসেবে চাকুরী করেন এবং এক বৎসর কাল বর্তমান ঢাকা বিজ্ঞান কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন।

            মিঃ আহম্মদ ১৫ই ডিসেম্বর ১৯৬২ খিস্টাব্দে পাকিসত্মান ট্যাক্সেস সার্ভিসে যোগদান করেন এবং তিনি দুই বৎসর লাহোর এবং করাচীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর আয়কর কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি জানুয়ারী ১৯৮২ পর্যমত্ম উপ-কমিশনার (কর) দ্বিতীয় সচিব (কর) যুগ্ম এবং অতিরিক্ত কমিশনার (কর) প্রথম সচিব (কর) N.B.Rঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ফেব্রম্নয়ারী ১৯৮২ খ্রীষ্টাব্দে কর কমিশনার হিসাবে পদোন্নতি পেয়ে পর্যায়ক্রমে খুলনা এবং চট্টগ্রামে দায়িতব পালন করেন ফেব্রম্নয়ারী ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দ পর্যমত্ম। পরবর্তীতে তিনি সদস্য (কর) N.B.Rহিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যখন L.P.Rএ যান তখন তাকে বি.সি.এস. ক্যাডার (ট্যাক্সেশন) এ সচিব পর্যায়ে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

            মিঃ আহম্মেদ ওয়াশিংটন IMFইনষ্টিটিউট ওয়াশিংটন ডিসি (U.S.A) এবং পাবলিক ফাইনান্স টোকিওতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। নভেম্বর ১৯৯৪ খ্রীষ্টাব্দে অবসর গ্রহণের পর তিনি পুনরায় চুক্তি ভিত্তিক কর Settlement Commissionএ চেয়ারম্যান পদে তিন বৎসরের নিয়োগ পান। (সূত্র- শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বহি ১)

মোঃ মোতাহার হোসাইন

            জনাব মোঃ মোতাহার হোসাইন ১৯৫৪ সনের ৩১ ডিসেম্বর, চাঁদপুর জেলার পদুয়া গ্রামে এক সম্ভ্রামত্ম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র মোতাহার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে সণাতক (অনার্স) ও মাষ্টার্স করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে অর্থ-ব্যবস্থাপনায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের সদস্য (১৯৭৯ ব্যাচ) । বর্তমানে তিনি কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইনান্স হিসেবে কর্মরত। ইতিপূর্বে তিনি বাংলাদেশ মিশন জেনেভা, সুইজারল্যান্ড-এ ইকোনোমিক মিনিষ্টার হিসেবে কুটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন।

সরকারি চাকরির কর্মব্যস্ততা ও গুরম্ন দায়িত্বের সাথে লেখা-লেখিতে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে তিনি আত্মপ্রকাশ করছেন। তাঁর লেখা বাসত্মবধর্মী, দেশী-বিদেশী পত্র পত্রিকা ও জার্নালে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন সমাজ কল্যাণ কাজের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, বাংলা একাডেমী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, লায়ন্স ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব, টিআইবি, আঞ্জুমান ইত্যাদি সংস্থার সাথে সংশিস্নষ্ট আছেন। তাঁর পিতা মরহুম মোহাম্মদ ইলিয়াছ, বিএ, একজন খ্যাতনামা স্কুল শিক্ষক ছিলেন।

            লেখকের বইগুলো হলো : ভিন্ন অনুভূতি (কবিতার বই), কর্মের অমত্মরালে ছন্দ (কবিতার বই), ইংলিশ পোয়েম্স বাই এ নন-ইংলিশ (ইংরেজি কবিতার বই), স্বপ্নের সুইজারল্যান্ড (যন্ত্রস্থ)।

মোঃ মুয়াজ্জেম হোসাইন

            জনাব মোঃ মুয়াজ্জেম হোসাইন ১৯৬১ সালে ৩০ শে জুন চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার পদুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরম্নহুম মোঃ ইলিয়াছ একজন খ্যাতনামা স্কুল শিক্ষক ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সণাতকত্তোর ডিগ্রী গ্রহণ করে ১৯৮৪ সালে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এনডিসি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ছিলেন। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উপসচিব (শৃঙ্খলা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভুমি মন্ত্রণালয়ে প্রথমে যুগ্মসচিব এবং বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চাকুরীকালীন দেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ যুক্তরাজ্যে একটি সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ কোর্স করেছেন। এছাড়া তিনি ভারত, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও সৌদি আরব সফর করেন। তিনি চাকরি ও ব্যক্তি জীবনে ন্যায় পরায়নতা, দেশাত্বাবোধ ও জনসেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নিজ এলাকায়ও তিনি বিভিন্ন আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন।

অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ওয়াসিমুদ্দীন

অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ওয়াসিমুদ্দীন ১৯১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ত্রিপুরা জেলার চাঁদপুর মহকুমার মতলব উপজেলার ঘোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজী উমেদ আলী। মাতা আমিনা বেগম। এই পরিবারের আদি নিবাস বর্তমান চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বারকোটা গ্রামে। পরবর্তীতে মুহাম্মদ ওয়াসিমুদ্দীনের দাদা জনাব কমর উদ্দীন ঘোনা গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। বাবা ছিলেন অত্যমত্ম ধর্মপরায়ণ মানুষ- তিনি দুবার হজ্ব করেন। শৈশবে তাকে নিকটবর্তী কচুয়া উপজেলার হিলাজতন বোর্ডিংএ থেকে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি মতলব (উত্তর) উপজেলার ছেঙ্গারচর উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হন এবং প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৪২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি তুখোড় মেধাবী ছাত্র ছিলেন এবং অনর্গল ইংরেজীতে কথা বলতে পারতেন। আরবি ভাষা ও সাহিত্যে তার অসাধারণ ব্যুৎপত্তি এবং পারদর্শিতা তাকে ব্যতিক্রমী মানবিক সত্ত্বা অর্জনে সক্ষম করে তুলেছিল। ধর্মের গোঁড়ামি নয় জীবনবাদী মানুষ হিসেবে বাসত্মবতা ও মানবতার সকল দিক পূর্ণ করে তিনি একজন সুফি আদর্শ অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন জ্ঞানের রাজ্যে, জ্ঞান বিসত্মারের কর্মক্ষেত্রে।

তাঁর কর্মজীবন শুরম্ন হয় চাঁদপুর সদর উপজেলার সফরমালী মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে। তারপর ১৯৪৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি আরবি ও ফার্সী ভাষার অধ্যাপক হিসেবে কিশোরগঞ্জ গুরম্নদয়াল কলেজে যোগদান করেন। প্রকৃতপক্ষে এ দিনটিতেই গুরম্নদয়াল কলেজের শুভযাত্রা। মুহাম্মদ ওয়াসিমুদ্দীনের জীবন নিবিড়ভাবে জড়িয়ে যায় কলেজের সঙ্গে। কলেজ হয়ে উঠলো তার জীবন, তাঁর প্রাণ। তার ঐকামিত্মক চেষ্টায় এবং নিরলস পরিশ্রমে গুরম্নদয়াল কলেজ দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলোর মধ্যে অনন্য স্থান অধিকার করে। চাকরিতে যোগদানের পর তিনি পর পর বেশ ক’বার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৫৮ সালে ১ নভেম্বর কলেজটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৭৭- দীর্ঘ ৩৫ বছর তাঁর স্বপ্নময় বসবাস এই কলেজের সঙ্গে এবং এমনি করেই গড়ে তুলেছেন তার স্বপ্নসৌধ এবং ঝাঁকে ঝাঁকে কত ছাত্র-ছাত্রী বেরিয়ে গেছে এই পীঠস্থান থেকে গৌরবের মালা জড়িয়ে তার সংখ্যা নিরূপন করা কঠিন। সবার হৃদয়ে সেই মূর্তিমান আদর্শ মহামানবটির প্রচ্ছায়া গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় অমত্মর্লীন। মূলত: তিনিই স্বনামধন্য গুরম্নদয়াল কলেজ- তিনি নিজেই তার প্রতিষ্ঠান। কিশোরগঞ্জ তথা বাংলাদেশে তার নাম অনন্যসাধারণ ও আদর্শ শিক্ষাবিদ হিসেবে পরিগণিত।

 ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সদালাপী ধর্মপ্রাণ সজ্জন মানুষ। শিক্ষার সাধনা ও বিসত্মার তার জীবনের একমাত্র ব্রত। তিনি কলেজের জন্য যতটাই ছিলেন অমত্মঃপ্রাণ ঠিক ততটাই ছিলেন সংসারের প্রতি উদাসীন। ধ্যান- ধারণায় শুধু কলেজ, কলেজ, কলেজ। কলেজের গাছপালা, ঘর দুয়ার যেন তার জীবনের চাইতে দামী- কলেজের উন্নয়নই একমাত্র স্বপ্ন। এমন আত্মত্যাগ কিংবদমত্মীকে হার মানায়। অবসর তার জীবনে আনন্দ বয়ে আনে নি। চলে আসেন ঢাকায় ১৩২, পূর্ব কাজীপাড়া, মিরপুর নিজ গৃহে- সে কোনো প্রাসাদ নয় নিদেনপক্ষে মাথা গোঁজার ঠাই। দিন গুণেন সেই স্বপ্নের কলেজকে ঘিরে- স্বপ্নের দেশে চলে যান ১৯৭৯ সালের ৫ জানুয়ারী। অবসরের মাত্র এক বছর পর। আশ্চর্য তার জীবন-আশ্চর্য মানুষ তিনি। আদর্শের বাতি ঘর হয়ে আছেন- থাকবেন। তার প্রতি আমাদের  গভীর শ্রদ্ধা।

তাঁর ছাত্রদের মধ্যে রয়েছেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ, বর্তমান রাষ্ট্রপতি জনাব আব্দুল হামিদ, বর্তমান প্রধান বিচারপতি জনাব মোঃ মোজাম্মেল হোসেন,  প্রধান মন্ত্রীর উপদেষ্টা জনাব আলাউদ্দিন আহাম্মেদ, প্রাক্তন সেনা প্রধান লে.জে. নূরম্নদ্দীন খান, প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, মতলব উপজেলার গজরা গ্রামের মুন্সী বাড়ীর ড: মো: ইছহাক ও ড: মো: ইউসুফ যারা সম্পর্কে ওয়াসিমুদ্দীন সাহেবের শ্যালক। আরো অগনিত কৃতী ছাত্র। তিনি তিন পুত্র এক কন্যার জনক। উনার প্রথম সমত্মান জনাব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ছিলেন। দ্বিতীয় সমত্মান জনাব মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মেঘনা তেল কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। তার স্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ চুমকী, বর্তমান সরকারে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী। তৃতীয় সমত্মান রোকেয়া বেগম আমেরিকা প্রবাসী তার স্বামী দাউদকান্দী উপজেলার তুলাতুলি গ্রামের ড: মো: আলাউদ্দিন, নিউইয়র্কের ইষ্টার্ন আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক। চতুর্থ সমত্মান জনাব মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত। তার স্ত্রী বেগম মাহমুদা আখতার মীনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব ও অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের পরিচালক।

রহমান জাহাঙ্গীর

বিশিষ্ট সাংবাদিক রহমান জাহাঙ্গীর ১৯৫০ সালের ৭ই জুলাই নিজ বাড়ী নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের মাসুন্ডা মিঞাজী বাড়ীতে  জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাষ্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে সাংবাদিককতায় নিয়োজিত হন। তিনি বাংলাদেশ অবজার্ভারে এডিশন সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘ ১৭ বছর সাংবাদিকতা করেন। পরবর্তীতে সাপ্তাহিক ঢাকা কুরিয়ার, দি পিপল, দি ডেইলী স্টার, দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ বার্তা সম্পাদক, প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি দি ফাইনানসিয়েল এক্সপ্রেস পত্রিকায় এডিটরিয়াল কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রেস ইনষ্টিটিউট, ভয়েজ অব আমেরিকা, জার্মানি থেকে হাইয়ার ডিপেস্নামা ইন জার্নালিজম অর্জন করেন। মালয়েশিয়া থেকে One month in service trainingগ্রহণ করেন। তিনি আনন্দ বাজার পত্রিকা (কলকাতা) ইনডিপেন্ডেন্ট (মুম্বাই) ইন্ডিয়ান পোষ্ট (মুম্বাই), ইনডিপেন্ডেন্ট, দি সান্ডে (কলকাতা), সৌদী গেজেট, দি আরব নিউজ (সৌদি আরব) দৈনিক খালিজ টাইমস (সংযুক্ত আরব আমিরাত), দি গাল্ফ টাইমস (কাতার), এ.পি.পি (পাকিসত্মান) এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত ইংরেজী সংবাদের কমেন্টেটর হিসেবে ৩৫ বছর কাজ করেছেন। তিনি সাংবাদিকতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত ও পাকিসত্মান ভ্রমন করেন।

 

 

ড. রাম প্রসাদ সরকার

            ড. রাম প্রসাদ সরকার ১৯৩৪ সালে বাইশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মতলবগঞ্জ জে.বি হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। অত্যমত্ম মেধাবী ছাত্র ছিলেন। নবম শ্রেণিতে অধ্যয়ণ কালে প্রধান শিক্ষক ওয়ালীউল্লাহ পাটোয়ারী তাঁকে একটি ইংরেজী বই দিয়ে বললেন এখানে পঞ্চাশটি রচনা আছে। সাত দিন পর লিখিত পরীক্ষা নেব। সাতদিন পর প্রধান শিক্ষক তাঁকে একটি নতুন রচনা লিখতে দিলেন, সময় বেঁধে দিলেন ২০ মিনিট। কী আশ্চর্য! ২০ মিনিটের মধ্যে তার রচনা শেষ। ড. রাম প্রসাদ ১৯৪৯ সালে টেস্ট পরীক্ষার পর দেশ বিভাগের জন্য জন্মস্থান পরিত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রধান শিক্ষকের আশা ছিল সে পরীক্ষা দিলেই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় প্রথম হতেন। দেশ ত্যাগ করে ও মানসিক বিপর্যস্ততা সত্ত্বেও কলিকাতায় গিয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। তিনি গণিত ও আবহাওয়ার ওপর ছয়টি ডক্টরেট ডিগ্রি প্রাপ্ত ছিলেন। ভারতে আবহাওয়া বিভাগে যোগদান করে সর্বোচ্চ পদে Director General  হন। সর্বশেষ এশিয়া ও প্রশামত্ম মহাসাগরীয় Metrological Department Director General  হন। যার সদর দপ্তর ছিল জেনেভায়। ১৯৮৯ সালে তিনি তার প্রিয় জন্মভূমি ও মতলব হাইস্কুল পরিদর্শনে আসেন। তাঁকে স্কুলের পক্ষ থেকে বিপুল সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এতে ১০ হাজার লোক জমায়েত হয়েছিল। তার সারগর্ভ ভাষণে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও জনগণ অভিভূত হয়েছিলেন।

 

মোঃ সফিকুল ইসলাম

জনাব মোঃ সফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিব। তিনি নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নে আশ্বিনপুর গ্রামের সম্ভ্রামত্ম মুসলিম পরিবারে ১৯৪৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সাবেক ইউ.পি চেয়ারম্যান নূরম্নল ইসলাম পাটোয়ারী এবং মাতা ময়মুনা খাতুন। আশ্বিনপুর হাই স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ঢাকা সিদ্ধেশ্বরী হাই স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯৬৪ সালে কৃতিত্বের সাথে ১ম বিভাগে এস.এস.সি পাস করেন। নটরডেম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় বি.এস.সি অনার্স ও এম.এস.সি ডিগ্রি অর্জন করেন।

            শিক্ষা জীবন শেষে কিছুকাল বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে চাকুরী করার পর বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ সরকারের ১ম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে উপ-সচিব ও যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকুরী করে বিগত ২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

            তিনি জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং লন্ডনস্থ সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিঃ এর অলটারনেটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে কর্ম সম্পাদন করেন। তিনি পেট্রোবাংলা, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ ইন্স্যুর‌্যান্স একাডেমি, হোটেল সোনারগাঁও ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন।

যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিসত্মান প্রভৃতি দেশে সরকারি ও ব্যক্তিগত কাজে ভ্রমণ করেন। বর্তমানে তিনি অবসর জীবন যাপন করছেন।

শাহেদ আলী পাটোয়ারী

রাজনীতিবিদ শাহেদ আলী পাটোয়ারী ১৮৯৯ সালে মতলবের আশ্বিনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মাসুদ পাটোয়ারী। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা নিজ এলাকায় শেষ করেন। ১৯২১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে সম্মান অর্জন করেন। ১৯২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ১ম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে সণাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন শাস্ত্রে সণাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবনে কুমিল্লা জর্জকোর্টে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন ১৯২৫ সালে। রাজনীতিক হিসাবে শাহেদ আলী পাটোয়ারী ১৯২৯ সালে শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। তিনি ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা জেলা শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৩৭ সালে প্রথম বঙ্গীয় আইন সভায় সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৪৫ সাল পর্যমত্ম পদে বহাল ছিলেন। ১৯৪৭ সালে পাকিসত্মান হওয়ার পর ১৯৫৩ সালে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক শ্রমিক পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে যুক্ত ফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে চাঁদপুর পশ্চিম নির্বাচনী এলাকা থেকে পূর্ব বঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৮ সালে ১৯শে সেপ্টেম্বর কৃষক শ্রমিক পার্টি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৫৮ সালে ২৩শে সেপ্টেম্বর পার্লামেন্ট সভায় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। স্পিকারের দায়িত্ব পালন কালে সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যকার হাতাহাতি ও বাকবিতন্ডায় এক পর্যায় তিনি সংসদেই আহত হন এবং তিন দিন পর অর্থাৎ ১৯৫৮ সালে ২৬শে সেপ্টেম্বর তিনি অকাল মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্য সূত্র: ‘মেঘনার পাড়’; চাঁদপুর জার্নালিস্ট ফোরামের প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী-২০০৬ ও গুণীজন সম্মাননা  উপলক্ষ্যে প্রকাশিত; প্রকাশকাল ৩১ জুলাই ২০০৬ এবং লেখাটি সংকলিত।

 

এম, এ শরীফ উল্লাহ

১৯৪০ সনের ২৩ মার্চ, পৈলপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ইং সনে মতলবগঞ্জ জে,বি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ২৫তম স্থান অধিকার করেন। ১৯৫৮ইং সনে জগন্নাথ কলেজ থেকে আই,কম পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করেন। ১৯৬১ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে অনার্স ও ১৯৬২ইং সনে মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি ২য় শ্রেণীতে প্রথম হন। তিনি ১৯৬৩-৬৬ইং পর্যমত্ম বুয়েটের শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬৬ইং সনে ল্যান্ডস এন্ড ক্যান্টনমেন্ট সার্ভিসে ক্যান্টনম্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে যোগদান করে সর্বশেষ ১৯৮৫ইং পর্যমত্ম প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫-৮৬ইং উপ-সচিব পদে যোগদান করে সর্বশেষ ১৯৯৪-৯৭ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্বপালন শেষে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি পেট্রোবাংলা, এফ,ডি,সি, ওয়াসা, শিল্প ব্যাংক, সিটি ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পস্ন্যানিং একাডেমীর বোর্ড অব গভর্নসের গভর্নর, ন্যাশনাল রিসোর্স কমিটির আহবায়ক সহ বহু প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন। তিনি ১৯৭৫ইং সনে নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত সার্ক সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি প্রশিক্ষণ, সেমিনার উপলক্ষে যুক্তরাজ্য ও জাকার্তা সফর করেন।

 

ড: শোয়েব আহমেদ

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ড: শোয়েব আহমেদ, ১৯৪৮ সনের ১ মার্চ নিজ মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উদ্দমদী পাটওয়ারী বাড়ির সম্ভ্রামত্ম পরিবারের সমত্মান। ১৯৬২ সালে মতলবগঞ্জ জে,বি, উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ১ম গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্ত হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই-এ পরীক্ষায় ৪র্থ স্থান অধিকার করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি,এ (অনার্স) ও মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পোষ্ট-গ্র্যাজুয়েট ও ওয়াশিংটন ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে পি,এইচ,ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৭০ইং সনে তৎকালীন সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ  হয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন শেষে বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আই,আর,ডি, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। সবশেষে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি আইইউবি ঢাকা এর অধ্যাপক ও কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মজীবনে তিনি বহু দেশী ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান/ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান, আইপিডিসি, কাফকো এর চেয়ারম্যান। বিদেশী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড অব গভর্নস এর গভর্নর,  আইএমএফ এর বোর্ড অব গভর্নস এর গভর্নর এবং এডিবি বোর্ড অব গভর্নসের, গভর্নর,  এশিয়ান প্রডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন, জাপান এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের এলামনাই সমিতির দু’বার সভাপতি ও বাংলাদেশ স্কাউটস্ এন্ড গাইডস্ এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।


এডঃ ছিদ্দিকুর রহমান হাজরা

আলহাজ্ব এডঃ ছিদ্দিকুর রহমান হাজরা ১৯৩০ সালে চাঁদপুর জেলার অমত্মর্গত মতলব থানার দিঘলদী গ্রামে (মুন্সির হাট) এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৬ সালে মতলবগঞ্জ জে.বি পাইলট হাই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাশ করেন। তিনি ১৯৪৮ সালে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা, ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি.এ (অনার্স) এবং ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাষ্টার্স পাশ করেন। ১৯৫৬ সালে এল.এল.বি পাশ করেন তিনি। ১৯৬২ সালে প্রথম জর্জ কোর্ট বারে, ১৯৬৩ সালে হাই কোর্ট বারে এবং ১৯৭২ সালে দেশের সর্বশেষ আদালত সুপ্রীম কোর্ট আদালত বারে যোগদান করেন। জনাব হাজরা সাহেব ১৯৫৪ সালে শিক্ষানুরাগী সেতারা বানু সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাহার সহধর্মীনী সিদ্ধেশ্বরী গালর্স হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তাহার শ্বশুর এডঃ আলী আজম নারায়ণগঞ্জ কোর্টের একজন সাবেক পি.পি ছিলেন। জনাব ছিদ্দিকুর রহমান হাজরা বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন। তিনি বাংলাদেশ পিপলস্ লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ছিলেন। তিনি মতলব কো-অপারেটিভ সোসাইটির একজন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। তিনি চাঁদপুর জেলা সমিতি ঢাকাতে ১৯৯৩ সাল হইতে ১৯৯৯ সাল পর্যমত্ম একজন দক্ষ সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।  তথ্য সূত্রঃ সূবর্ন জয়মত্মী-২০০৫, চাঁদপুর জেলা সমিতি ঢাকা।

 

হরদয়াল নাগ

হরদয়াল নাগ ১৮৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন মতলব উপজেলার কাশিমপুর গ্রামে। পিতা গুরম্নপ্রসাদ নাগ, মাতা গোবিন্দ প্রিয়া। ১৮৭৪ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে এনট্রান্স পাশ করেন। এফ.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্বল্পকালীন সরকারী চাকুরীর পর ১৮৮৩ সালে আইনের সনদ লাভ করেন। চাঁদপুর বারে আইনবিদ হিসাবে তিনি অপূর্ব দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে। বহু বৎসর তিনি বার সমিতির সভাপতি ছিলেন। তিনি আইন ব্যবসায় যথেষ্ট প্রতিপতি ও খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু বৃহত্তর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এই দূরদর্শী নেতার আইন জ্ঞান ও বিচক্ষণতার বহুল পরিচয় দেশবাসী পেয়েছেন-ইংরেজ সরকার সন্ত্রসত্ম বোধ করতেন তাঁর অকাট্য যুক্তি জালের কাছে। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধী ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জ দাস-এর আহবানে চাঁদপুরের বিখ্যাত উকিল হরদয়াল নাগও আদালত বর্জন করেন। দেশমাতৃকার মুক্তি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং কংগ্রেসের কাজে যোগ দিলেন। কিন্তু তিন মাস পর অন্যান্য উকিলগণ আদালতে ফিরে গেলেও হরদয়াল নাগ ফিরলেন না। দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কারণে তাঁর জীবনের শেষদিন অবধি বিদেশী সরকারের নিয়ন্ত্রিত আদালতে আইনজীবী রূপে আর গেলেন না। এই আদর্শনিষ্ঠ পুরম্নষ আইন ব্যবসার চেয়েও দেশসেবাকে উচ্চস্থান দিয়েছেন। বরাবর তিনি ছিলেন অকুতোভয় জননেতা।

ঢাকা অবস্থানকালে ‘ঢাকা প্রকাশ’ (১৮৭৬) ও ভারত হিতৈষিণী’ (১৮৮০-৮৩) পত্রিকার প্রকাশনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তখন কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর সংস্পর্শে আসেন। ১৮৮৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেস এর দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রথম যোগ দেন এবং আজীবন রাজনীতিতে নেতৃত্বের ভুমিকা পালন করেন। (১৮৮৬-১৯৪২)

১৯০৩ থেকে ১৯১১ পর্যমত্ম বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে হরদয়াল নাগ সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। ১৯০৭ সালে বিদেশী পন্য বর্জণ আন্দোলনে মেহের কালি বাড়িতে অনুষ্ঠিত সভার ৩৩ জন কর্মী সহ প্রথম গ্রেপ্তার হন। কথা ও কাজে নাগ মহাশয় ছিলেন জাতীয়তাবাদের প্রতীক। ১৯০৬ সালে মার্চ মাসে গঠিত জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সাথে জড়িত হন এবং ১৯২২-২৪ সাল পর্যমত্ম ছিলেন এর  সভাপতি। ১৯০৬ সালে মে মাসে জননায়ক হরদয়াল নাগ এর নেতৃত্বে চাঁদপুরে স্থাপিত হয় জাতীয় বিদ্যালয় এবং তিনি উক্ত বিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বিদ্যালয়টি কৃতিত্বের সাথে চলে ১৯৪৮ সাল পর্যমত্ম। ১৯২১ সালে এপ্রিল-মে মাসে সিলেট চা বাগানের কুলিদের বিদ্রোহ ও কর্মত্যাগ এক সংঘর্ষের সৃষ্টি করে। কুলিদের পাশে এসে দাঁড়ান হরদয়াল নাগ। এ সমস্যা সমাধানে ছুটে আসেন দেশের নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় নেতৃত্বে ছিলেন হরদয়াল নাগ। ১৯২১ সালে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন। হরদয়াল নাগ ১৯৩০ সালের লবন আন্দোলনে ত্রিপুরা, সিলেট ও নোয়াখালি জেলার নেতার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৩১ সালে বেঙ্গল প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স-বহরমপুর অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেছিলেন এ বরেন্য পুরম্নষ, যা গৌরবের সঙ্গে স্মরনীয়। ১৯৩২ সালে আইন অমান্য আন্দোলনের অপরাধে ছয় মাস কারাদন্ডে দন্ডিত হন। পরে বহরমপুরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩৫ সালে কংগ্রেসের ৫০ তম বর্ষ পূর্তিতে জুবিলী উৎসবে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সভায় পৌরহিত্য করেন। শেষ বারের মত তিনি গান্ধীর জীবনের সাথে মিলিত হন বিক্রমপুর মালেকান্দ গান্ধি সেবা সংঘের অধিবেশনে ১৯৪০ সালের ফেব্রম্নয়ারী মাসে। ১৯৪১ সালে তাঁর ৮৯ বছর পূর্তিতে চাঁদপুরে জন্ম জয়মিত্ম উৎসবে প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সমিতির সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব তাঁর ভাষণে বলেন নাগ মহাশয় সাধারণ সৈনিক হতেই ক্রমে অন্যতম সেনাপতির পদ লাভ করেছিলেন। তাঁর পুত্র মনকুমার নাগ লিখেছেন, তিনি ছিলেন বড় মানবতাবাদী। তিনি দ্বিজাতিতত্ত্বে বিশ্বাস করতেননা।  তাঁর ধ্যান মন্ত্র ছিল এক জাতি এক পন-প্রাণ একতা। তাঁর বাড়ি হরদয়াল ভবন, ছিল রাজনৈতিক ও সমাজ সেবীদের শ্রী ক্ষেত্র। তাঁর বাড়িতে গান্ধীজি এসেছিলেন তিন বার। গান্ধী ভক্ত হিসাবে তাকে বলা হতো চাঁদপুরের গান্ধী। চাঁদপুরে এই মহান নেতা ১৯৪২ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তথ্য সূত্র : মোহাম্মদ সফিউল আলম কর্তৃক (১। ‘‘ভারতকোষ’’;  পঞ্চম খন্ড, জীবনী অভিধান, Hidustan Standard‘৩২, Amrita Bazar‘৩৫’’। ২। ‘‘শাশ্বত ত্রিপুরা’’, ত্রিপুরা হিতস্বাধীনী সভা শত বার্ষিকী স্মারক সংকলন (১৮৭২-১৯৭২); প্রকাশ কালঃ  ১৫ আগস্ট, ১৯৭৬ খ্রি:, পৃষ্ঠা নং- ১৯০,১৭৫, ৪৭ ও ৫০, ৩। ‘‘কুমিল্লা জেলার ইতিহাস’’; কুমিল্লা জেলা পরিষদ কর্তৃক ৭ই জুন ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত, পৃষ্ঠা-৯২৬-৯২৭) সম্পাদিত), ৪। জনাব অহিদুল ইসলাম সরকার কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য।